হৃদয়ে শরীয়তপুর ডেক্স:
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি জানে, তাদের দুর্নীতি, দুঃশাসন আর জনবিচ্ছিন্নতার কারণে মানুষ তাদেরকে ভোট দিবে না। বিএনপি মধ্যযুগীয় কায়দায় জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। অগ্নিদগ্ধদের কষ্টের কথা, অগ্নিসন্ত্রাসে স্বজন হারানো মানুষের কান্না কি দেশের জনগণ ভুলে গেছে? ঐ নারকীয় অগ্নিসন্ত্রাসের কথা মানুষ ভুলে যায়নি। বিএনপি নামক অগ্নিসন্ত্রাসীদের মানুষ ভোট দেবে না। শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিএনপি-জামায়াতচক্রের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতার বিরুদ্ধে যুবলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ পরশ বলেন, বিএনপি জানে, তাদের জন্য মানুষের কাছে কেবল ঘৃণাই রয়েছে, মানুষ তাদের বিশ্বাস করে না। আর সে কারণেই তারা নির্বাচনে যেতে চায় না। যার ফলে আগামী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যেই কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নিজেরাই নিজেদের মধ্যে হানাহানি করছে। কিন্তু দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকারের ওপরে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে জয়ী, মুক্তিকামী বাঙালি তাদের এই অশুভ তৎপরতাকে নস্যাৎ করবে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি কেন নির্বাচনে যেতে চায় না? এই বিষয়টি পরিস্কার। কিছু সুবিধাবাদীদের নিয়ে সামরিক শাসকের হাতে গঠিত বিএনপি প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার ফলে সুবিধাবাদী এই বিএনপি নেতারা হতাশ। তারা সবাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিএনপি এদেশের মানুষকে কিছুই দেয়নি। বরংচ, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাঙালির ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছেন। দেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন অর্থাৎ শেখ হাসিনা দেশের মর্যাদা উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করে দিয়েছেন। তাই জনগণ বিএনপির সাথে নেই। জনগণ এই জনবিচ্ছিন্ন দল বিএনপিকে ভোট দিবে না। এটি বিএনপি ভালো ভাবেই জানে। রাজনীতিতে নৈতকতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন নেতা নৈতিক স্খলনজণিত অপরাধের কারণে দ-প্রাপ্ত হলে পৃথিবীর কোন দেশেই তিনি রাজনীতি করতে কিংবা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। খালেদা জিয় যে অপরাধের কারণে দ-প্রাপ্ত, এ ধরণের নৈতিক স্খলনজণিত অপরাধের অভিযোগ পৃথিবীর খুব কম রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধেই শোনা যায়। আমাদের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী দ-প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারে না। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
তারেক জিয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাসহ পুরো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে হত্যার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। সেই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৩ জন নেতা কর্মী নিহত হয়। ২১ আগস্ট খুনের দায়ে তারেক জিয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক। ঠাণ্ডা মাথার এই খুনি দুর্নীতির মামলায়ও ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এবং আরেক মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ড। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী খুনি তারেক জিয়াও নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি এদেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে ১০ ট্রাক অবৈধ অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ জানে, বিএনপির হাতে এদেশের সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় তারেক জিয়া এদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই অবৈধ টাকাই এখন বিদেশে লবিস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, খালেদা জিয়া আর তারেক জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর বিএনপির নেতা কে? কাকে নিয়ে তারা ক্ষমতায় যাবে? তাদের প্রস্তাবিত প্রধানমন্ত্রী কে? আসলে বিএনপি ভালোভাবেই জানে, তাদের কোন নেতা নেই। নেতা ছাড়া কোন রাজনীতি হয় না, নির্বাচনও হয় না। তাই বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায় না তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভুল করতে চায়, তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করতে চায়। যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দ্যেশে বলছি-আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামাত যদি কোন ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করবেন।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ একটি স্লোগান নিয়ে আজ রাজপথে দাঁড়িয়েছে, সেটা হলো দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও যুবসমাজ। মার্চ মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস, এই মাসের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং এ মাসেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। আগামী ৭ মার্চ সারাদেশব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজিয়ে জানান দিবো বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, শেখ হাসিনার বাংলায় দেশবিরোধী শক্তি বিএনপি-জামাতের অবস্থান থাকতে পারে না।