শাওন বেপারী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
পদ্মানদীর ভাঙ্গনের শিকার হয় জাজিরা উপজেলার মানুষ প্রতি বছরেই । মাইলের পর মাইল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয় টি বিবেচনা করে জাজিরা উপজেলায় ২৮৮ টি চরাঞ্চলের বিশেষ শ্রেনীর ঘর নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়ার পর তার মধ্যে ১৩৩ টি ঘর নির্মাণের কাজ শেষ করেছে জাজিরা উপজেলা প্রশাসন।
তৈরীকৃত ঘরগুলো সারাদেশের ন্যায় বুধবার (২২-মার্চ) ৯ টার সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর করবেন। এই ঘরগুলো দুর্যোগ সহনীয় এবং সহ যেই অন্যত্র হস্তান্তর করা যায়। তাই স্থানীয় ভূমিহীন গরীব জনসাধারণ এই ঘর পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হবে বলে বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। মঙ্গলবার (২১-মার্চ) সকালে উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব জানিয়েছে জাজিরা উপজেলা প্রশাসন।
বড়কান্দি ইউনিয়নে ১৭ টি, বিলাসপুর ইউনিয়নে ১৬ টি, পালেরচর ইউনিয়নে ৩২ টি, যার মধ্যে জাজিরা সদর ইউনিয়নে ৬ টি, নাওডোবা ইউনিয়নে ২১ টি, পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে ৪ টি এবং মূলনা ইউনিয়নে ৩৭ টি ঘর করা হয়েছে। বরাদ্দের বাকি ঘরগুলো বাদ পড়া ইউনিয়নসহ বিশেষ প্রয়োজনীয় ইউনিয়নগুলোতে ধাপে ধাপে করা হবে বলে জানানো হয়েছে জাজিরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: কামরুল হাসান সোহেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাইলাতুল হোসাইন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: নজরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইমন মোল্লা ।
এসময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: নজরুল ইসলাম বলেন, এই ঘরগুলো তৈরি করতে আমাদের অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে। তবুও আমরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে এখানকার ভূমিহীন গরিব শ্রেণির মানুষের জন্য তৈরি করেছি। আমরা আশা করছি এই ঘরগুলো স্থানান্তরযোগ্য হওয়ায় ঘরগুলো পেয়ে অনেক খুশি হবে এখানকার ভূমিহীনরা।
জাজিরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান সোহেল জানান, জাজিরা উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে উপজেলা মনিটরিং কমিটির সুপারিশের আলোকে এই চরাঞ্চলের বিশেষ শ্রেনীর ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ভাঙনের শিকার হলে সহজেই ঘরগুলো খুলে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। তাই মানুষের গৃহ যেমন রক্ষা পাবে, আবার সরকারেরও পুনরায় ঘর তৈরি করে দিতে হবেনা। সুতরাং এই চরাঞ্চলের ঘরগুলো টেকসই এবং দুর্যোগ সহনীয় হবে।
জাজিরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোবারক আলী শিকদার বলেন, এমনিতেই আমাদের এলাকার অধিকাংশ মানুষ গরীব। তাছাড়া আমরা পদ্মা বিধৌত এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় প্রতিবছরই ভাঙনে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। তাই এই বিশেষ শ্রেণির ঘর আমাদের আরও অনেক বেশি প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পদ্মানদীতে স্থায়ী বেরিবাধ নির্মান প্রকল্প খুব দ্রুত চালু হবে। আশা করছি তার আগ পর্যন্ত এই বিশেষ শ্রেণীর ঘর তৈরী প্রকল্প অব্যাহত থাকবে।