শনিবার ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ বিকাল ৫:৩৭

ডামুড্যায় কাজল হত্যা মামলায় প্রেমিকের ফাঁসি, ৩জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জুন ৮, ২০২৩            

হৃদয়ে শরীয়তপুর ডেক্সঃ

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় উপজেলায় আলোচিত অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কিশোরী কাজল আক্তারকে (১৪)  গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় প্রেমিকের ফাঁসি ও অপর তিন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামীকে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার ৭জুন দুপুর ২ টায় শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন ডামুড্যা উপজেলার বড় নওগাঁ গ্রামের তাজুল ইসলাম চৌকিদারের ছেলে বাবু চৌকিদার (২৫)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন একই গ্রামের আজগর আলী খানের ছেলে জুয়েল খান (১৯), বাচ্চু সরদারের ছেলে ফারুক সরদার (২৪) ও চরভয়রা গ্রামের বাদশা মিয়া সরদারের ছেলে তানভীর হোসেন শামীম (২৪)।

মামলার চার্জশীট ও আদালত সুত্রে জানা গেছে, ডামুড্যা উপজেলার কুলকুরি গ্রামের মুরগী ব্যবসায়ী  আলাউদ্দিন ছৈয়ালের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোরী মেয়ে কাজল আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বাবু চৌকিদারের। একাধিকবার তারা শারীরিক মেলামেশা করে। এক পর্যায়ে কাজল বাবুকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু বাবু কাজলকে বিয়ে করতে রাজি ছিলনা। ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে সাত টার দিকে বাবু চৌকিদার পরিকল্পিত ভাবে কাজলকে ফোন করে বাড়ির পাশের বাগানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে বাবুর সহযোগী জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীম কাজলকে পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে চাইলে কাজল ডাক চিৎকার দেয়। পরে তারা সবাই মিলে কাজলকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ খালে ফেলে দেয়। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে ১শ গজ দূরে খালের মধ্যে থেকে হাত-পা, ও মুখ বাঁধা  অবস্থায় কাজলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই কাজলের বাবা আলাউদ্দিন ছৈয়াল বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ বাবু চৌকিদার,  জুয়েল খান, ফারুক সরদার ও তানভীর হোসেন শামীমকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে তানভীর হোসেন শামীম ছাড়া বাকি তিন আসামী প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলা তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালত চার্জ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করে। ২০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহন শেষে বুধবার দুপুর ১টায় মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত। এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট হলেও আসামী পক্ষ আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, কিশোরী কাজল ধর্ষণ ও হত্যা মামলা একটি আলোচিত ঘটনা। আসামীদের সাজা দিয়ে আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।

আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, আসামী পক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

© Alright Reserved 2021, Hridoye Shariatpur